এই যাহ্ .... ভুলেই গেল। কটা দিন জ্বালাই নি তাতেই ভুলে গেছে। শুনেছি একটা গার্লফ্রেন্ডও নাকি আছে। পুরুষ মানুষগুলো এমনই হয়। একটু চোখের আড়াল হলেই মন থেকেও Delete করে দেয়। ব্যাটা যদি একবার Heart টা দিতি,তো বুঝতি কতটা যত্নে আছে ওটা। দিলি তো দিলি এমন একজনকে যে ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিল। আর আমি বেচারী সেই থেকে তোর পেছনে ছুটছি তো ছুটছি। আর ধরতে পারছি না। মাঝে মাঝে ধরা দিস,আবার উড়ে যাস।
মেজাজ গরম। আমি ফোন দিতে মানা করেছি বলেই আর ফোন দেয়া যাবে না,না? তা তো যাবেই না। আমি না থাকলে নিশাত,মৌমিতা,লিরা আরো কতজন মনের ভেতর গৌল্লাছুট খেলতে পারে তাই না? গাধাটাকে নিয়ে এইসব হাবিজাবি ভাবছিলাম আর রাগে ফুসছিলাম। এই সময় আপাটা এসে ধ্যান ভঙ্গ করে দিল। কে যেন ফোন করেছে। এই হয়েছে আর এক যন্ত্রনা।ওকে নিয়ে ভাবতে বসলেই কারো না কারো গা জ্বালা করবে। আর অমনি উল্কার মত এসে আমার ধ্যানটা ভাঙবে। মনে মনেই তো বকি নাকি? তাও শান্তিতে বকতে পারি না।
মোবাইলটা হাতে নিয়ে নাম্বারটা দেখলাম। হাঁতটা কাঁপছে। অবাক হয়ে ভাবছি,আজ এতবছর পরও আমার মনটা এতটা অনুভূতিপ্রবণ?? যে ধাক্কাটা খেয়েছিলাম ওর আবার relation হয়েছে শুনে,ভেবেছিলাম অনুভূতির ছিঁটেফোটাও অবশিষ্ট নেই। বুঝলাম ধারণা ভুল।
-"স্মৃতি,কেমন আছো ?"
-সেই গলা। চিনতে একটুও ভুল হলো না। আরে আরে,বুকের ভেতর লাব ডাব শব্দও বেড়ে গেছে দেখছি !! তারমানে এতদিন যে নিজেকে জীবন্ত জীবাশ্ম ভাবতাম,সেটা পুরোটাই ভুল।
মর্ জ্বালা,লোকটার প্রতি প্রেমপ্রীতি এখনো রয়ে গেছে দেখছি।
-"ভালো"-এককথায় উত্তর আমার।
-তুমি মানা করেছিলে Call করতে তারপরও...
-তারপরও করলে,কেননা ছ্যাকা খাওয়া Heart টা পুরোপুরি সুস্থ্য হয়নি এখনো।তাই তো ?
হাসির শব্দ শুনতে পেলাম তোমার। কতদিন তোমার এই হাসিটা দেখিনা। খুব দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে। ছেলে জানলি না কখনো,তোর এই হাসির প্রেমেই পড়েছিলাম।
-হুমম্। ঠিক বলছো। ছ্যাকার মাত্রাটা বোধহয় একটু বেশিই হয়ে গেছে।
-তো আমাকে ফোন দেয়া হল কেন ? গার্লফ্রেন্ডকে ফোন দিলেই পারতে।(গার্লফ্রেন্ডকে ফোন দিচ্ছিস এ কথা মনে হলেই ব্যাটা তোর ঘাড় মটকে দিতে ইচ্ছে করে)
-হুমম্। তা যা বলেছ,ঠিকই বলেছ। আচ্ছা, ওকেই ফোন দিই ,কেমন?
-খবরদার যদি ওকে ফোন দিয়েছ তো ...
-তুমিই না বললে,গার্লফ্রেন্ডকে ফোন দিতে।
-বলেছি বলেই দিতে হবে?
-সহ্য করতে পারনা ওকে না?
-না পারি না ।শুনে Happy হলে ?
-না ।
-কেন ?
-স্মৃতি,এতটা ভালো না বাসলেও পারতে ।
-কে বলেছে তোমাকে ভালোবাসি ?
-কেউ বলে নি। আচ্ছা, কেন বোঝনা মনের ভেতর জায়গাটা তো একজনের জন্যই থাকে । -সেই জায়গায় একটা সময় তো আমিই ছিলাম। সরিয়ে অন্যজনকে দিয়ে দিলে কেন ? -এটা আমার ভুল ছিল। আমি অনেকবার ক্ষমা চেয়েছি এর জন্য ।
-আর তোমার একটা ভুলকে বছরের পর বছর ধরে আঁকড়ে ধরে আছি আমি । -স্মৃতি ,আমাকে ভুলে যাও। আমি স্বর্ণাকে ছাড়া আর কাউকে ভাবতে পারি না ।
-ভাবতে হবে না। রাখছি। কান্নাটা গলায় আটকে গেছে। এত কষ্ট হচ্ছে কেন? চোখের জল শুকিয়ে গেছে বলে? ভাবতে ভাবতেই ফোন দেয়া হয়ে গেল স্বর্ণাকে। বলার কিছু ছিল না তবুও বললাম-"যা পেয়েছ,হারিয়ে যেতে দিও না। একবার হারিয়ে গেলে কোনদিন খুঁজে পাবে না" আর কিছু বলা হল না। মনে হল,বুক চিড়ে কলজেটা কারও হাতে দিয়ে দিলাম।
(১ বছর পর )
তোমার বিয়ে আজ। তোমার আর স্বর্ণার। পরীর মত লাগছে স্বর্ণাকে। আমারও বউ সাজতে ইচ্ছে হচ্ছে, ভীষণ। তুমি হাসছ ,তোমার সেই নিষ্পাপ হাসিটা। এটুকুই চেয়েছিলাম। একজীবনে তো সবাই সবকিছু পায় না। এই জীবনে তুমি স্বর্ণার। কিন্তু ,পরের জীবনে তোমার হাতটা আমি ছাড়বো না,মনে রেখো ।
লিখেছেন-"Jannatul Ferdous Smrity"
No comments:
Post a Comment