Responsive Ads Here

28 January 2012

কুলছুমের কাহীনি ।

বগুড়া জেলার, আদমদিঘী থানার, ছোট একটি গ্রাম বিষা । ২০০৪
একটি পরিবার ।
একটি ছোট বাড়ি , তিনটি রুম, দুই ছেলে , এক মিয়ে, নিয়ে বছির আর কুলছুমের সংসার । জমি জমা যা আছে তা নিয়ে কষ্ট করেই দিন অতি বাহীত করছে ।বড় ছেলের বয়স ১২ বছর , মিয়েটির ৮ , ছোট ছেলে ৫ বছরে পড়েছে । ছেলে মিয়ের খরচ বহন করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে বছিরের ।কুলছুমের ভাইয়ের বিয়ে , ছেলে মিয়ের কাপড় কিন্তে হবে , মামার বিয়ে বলে কথা । কুলছুমের ও ভাল শাড়ি নেই . তারও দরকার । বছিরের হাতে টাকা পয়সা নেই । বছির কুলছুমকে ভাইয়ের কাছ থেকে কিছু টাকা ধার চাইতে বলে , কুলছুম ও ভেবে চিন্তে তাই করে । ৬ মাস পড়. . . .
একদিন টাকা ফেরত্‍ চাইল কুলছুমের ভাই । বছির এ বাহানা সে বাহানা দিয়ে, দিতে চেয়ে দেয় না , অনেক বার এ রকম করে । কুলছুম বছিরকে না বলে একদিন টাকা টি, ফেরত্‍ দিয়ে দেয় । শুরু হয় সংসারে অশান্তি . কথায় কথায় মার ধর করে কুলছুম কে । এক রাতে কুলছুম বছিরের প্রতিটি কথার প্রতিউত্তর করে । এটা বছির মেনে না নিয়ে, রেগে গিয়ে অনেক মার ধর কুলছুমকে ।কুলছুমের কাঁন্নায় পাড়া প্রতিবেশি ছুটে এসে বছির কে গালমন্ধ । পড়দিন সকালে বছির বাহীর হয়ে চলে যায় । কুলছুমের মিয়ে কুলছুমকে ডাকতে গেলে কোন কথা বলছে না । গায়ে হাত দিয়ে দেখে গা ঠান্ডা , ঝাকুনি দিলে সমস্ত শরীর ঝুকছে । চিত্‍কার শুরু করে মিয়েটি । পাড়া প্রতিবেশি ছুটে আসে । দেখতে পায় কুলছুম আর নেই , অনেকে মনে করন বছির কুলছুম কে মেরে ফেলেছে । অনেক ঝামেলা হবার পড় । . . . গ্রাম বাসি কুলছুমের দাফন কাফন সম্পন্য করে ।

তিন দিন পড় বছির ছেলে মিয়ে অন্য এক ঘরে শুয়ে আছে । মাঝ রাতে কাঁন্নার শব্দে বছরের ঘুম ভেঙ্গে যায় , পার্শে ঘরে কাঁন্না শুনে বছির প্রথম মনে করে , তার মিয়েটিই হয়তো কাঁদছে । হারিকেনের আলো টি বাড়িয়ে দিয়ে দেখে , মিয়ে, ছেলে গুলো ঘুমচ্ছে । বছির সাহস পাচ্ছেনা বাহির হতে । বড় ছেলেকে ডাকদিয়ে , সে কিছু শুনতে পাচ্ছে কি না জিঙ্গাসা করল । ছেলে হাই তুলতে তুলতে কিছু শুনতে পাচ্ছিনা । বলে আবার ঘুমিয়ে গেল । সে রাতে টি চলে গেল ।

পড়দিন রাতে দূরস্বপ্ন দেকে ভয় পেল , সমস্ত শরীর ভিজে গেল ঘামে । ভয়েই ঘুম ভেঙ্গে গেল বছিরের । আবার সে কাঁন্নার শব্দ শুনছে, ৩০ মি কেটে গেল । বছিরের প্রচন্ড প্রোসাব লাগল, সে কিছু তেই থাকতে পাড়না । কিন্তু ভয়ে বহীর হতেও পাড়ছেনা । ছেলে মিয়ে গুলো গভির ঘুমে অচ্ছন্য । ডাকার পড় ও কেউ উঠল না, এখানে বলে রাখি ছেলে মিয়ে গুলো বছির প্রতি বিরাগ । বাধ্য হয়ে হারিকেন হাতে নিয়ে বাহীর হলেন বছির । আশে পার্শে কেউ নেই , প্রোসাব অধেকটি হয়েছে , শো শো করে কি যেন চলে গেল তার পিছন দিয়ে । বছিরের সমস্ত চুল গুলো ভয়ে দাড়িয়ে গেল । প্রোসাব ও আটকে গেল , স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছে পিছেনে কে যেন হাঁপাচ্ছে । হাত পা থর থর করে কাঁপছে, চিত্‍কার দিবার মত ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে বছির । প্রোসাব শেষ না করে কি করেই দাঁড়াল , পিছন ফিরতে সাহস নেই তার , তার পড় ও দেখলেন পিছন ফিরে , একটু স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে নিলেন । একটি কুকুর দৌরে এসে তার পিছনে হাপাচ্ছে । আবার বসলেন বাঁকিটা শেষ করতে ,কুকুর টি চলে গেল ।প্রোসাব শেষ করে , করে উঠে ঘরে যাবার জন্য পা বাড়াতেই একটা দমকা বাতাসে হারিকেন টি নিভে গেল । আকাশে চাঁদ ও আছে মেঘ ও আছে , দেখা যাচ্ছে অস্পষ্ট । এগুচ্ছেন হঠাত্‍ তার নজর পড়ল , ঐ ঘরে যে ঘরে কুলছুম মারা গেছে । একটি নিলার্ভ আলোয় ঘরটি আলোকিত । আর একটু নজর দিতেই দেখল গেটের সামনে , সাদা কাপড় পড়া কেউ একজন দাড়িয়ে আছে । তার গায়ের ভিতর থেকে নিলার্ভ বর্ণের আলো বাহীর হচ্ছে । আর কোন দিকে না তাকিয়ে শোবার ঘরে দিকে এগিয়ে চলছেন বছির । হঠাত্‍ চুমকে উঠে থমকে গেলেন । মানুষ টি সামনে , মানুষ টি সামনে সে আর কেউ নয় কুলছুম । বছির প্রান পনে চিত্‍কার দিলেন , প্রানটি বাহীর হবার উপক্রম । খপ করে হাতটি ধরেছে, এতো জোরে ধরছে হার ভেঙ্গে যাবার মত অবস্থা ।চোখ সামনে সব কিছু অন্ধকার হয়ে এল আর কিছু মনে নেই বছিরের । কি যেন গায়ে ফুটছে , চোখ খুলে দেখতে পেলেন চারদিক বাঁশের বেরা আর ছেজুরের ডাল বিছিয়ে দেয়া , খেজুর ডাল গায়ে ফুটছে । উঠতে চেষ্টা করেলেন । না উঠতে পাড়ছেন না । হাত পায়ে প্রচন্ড ব্যাথা । হাত পা নড়াতে পাড়ছে না , কি হল তার , এ কি সে তো কুলছুমের কবরের উপর পড়ে আবার চিত্‍কার করছেন ভয়ে, ভয়ে ভয়ে . . . . . . চিত্‍কার চিত্‍কার না কেউ শুনছে না ।
সে তো জোরে কথা বলতে পাড়ছেনা ।সে কি স্বপ্ন দেখছে ? না কি সত্যই এই সব ? মনে মনে প্রশ্ন করছে বছির ।
ফজরের আজান শব্দ ঘুম ভাংল বছিরের , সে রুমেই শুয়ে আছে । হাত পা ব্যাথা । একি হাত পা নড়াতে পাড়ছেন না । পার্শে শুয়ে থাকা মিয়েটিকে ও ডাকার ক্ষমতা নেই তার ।

বছিরের পিঠে এখন ও কাঁটা ফুটে যে ক্ষত স্থান গুলো বিদ্যামান ।অনেক ডাক্তার কবিরাজ দিয়ে চিকিত্‍সা করে লেকড়া কথা , পা বাঁকি বাঁকিয়ে হাঠতে পড়েছে বছির , যা আগে তাও পাড়তেনা । হাতটি একে বারে অচল ।
(সমাপ্ত)

আপনার বলবেনঃ বছির কি ভাবে কুলছুমকে মেরে ফেলেছে ?

No comments:

Post a Comment