Responsive Ads Here

19 January 2012

মেডিকেল এর ভুতের গল্প(১৮ মাইনাস)

০৯ ই আগস্ট, ২০১১ বিকাল ৫:৩৯

গল্পটা এতটাই ছেলেমানুষী যে বড়রা পরলে মিনমিনিয়ে হাসবার

সম্ভাবনা আছে।তাই ১৮ মাইনাস।
সেদিন প্রথম দিন মেডিকেল এর। এযাবতকাল যত ভয়ঙ্কর গল্প বা

সিনেমা দেখেছি তার সবই তো সেই কঙ্কাল নয়তো লাশ নিয়ে। কেউ

হয়তো অনেক কষ্ট নিয়ে মরেছে, নয়তো মরিছে অভিশাপ দিয়ে।

এনাটমিতে কিনা প্রথম দিনেই সেই লাশকে আস্ত পাশে রেখে ক্লাশ।

প্রত্যেককে কিনা আবার সেই নরকঙ্কাল কিনিতে হবে।কঙ্কাল গুলোকে

খালি খাটের তল থেকে উঠতে হবে-আর মানুষ গিলিতে হবে।কত

আনন্দ।
তখনও রেডিও ফুর্তির ভুত ভুত খেলা শুরু হয়নাই-কিংবা কোন গল্পের

বই ও সেদিন পরি নাই। প্রথম দিনের এনাটমির পড়া হল

ভাট্রিবা(মেরুদন্ডের একখানা হাড্ডি) তাতেই আমার ভয়ের জোগাড়।

কিছু কিছু জায়গায় আবার মাংশের মত লেগেও আছে মনে হয়।কঙ্কাল

তো আমি কিনি নাই-পাশের জনের দিয়ে পড়াশুনা। কোনমতে

চোখখান যখনি বন্ধ করলাম ঘুমানোর জন্য-আমার ওরিয়েন্টেশন মনে

হয় শুরু হয়ে গেল।
সাদা হাড়ের ভিতর থেকে সুড়সুড় করে ধোয়া বের হতে শুরু করল।

আমার কোন অনুভুতি নেই-যেন প্রতিটা নতুন মেডিকেল স্টুডেন্ট ই

আজ এই স্বপ্ন দেখবে। টুচুক করে বেরিয়ে পড়ল ভুতটা। ছোট একটা

ভুত। আমি মনে মনে ভাবলাম-কি ওরিয়েন্টশন এ বুড়া বুড়া ভুত

আসবে, আমার ভাগ্যে জুটল পিচ্চি ভুত। তাই ভাব নিয়ে কথা বলব

কিনা ভাবতেছি।সে যাই হোক। সবশেষে যে কাহিনী উদ্ধার করলাম তা

হলঃ
সে অনেক কাল আগের কথা। তখনকার দিনে অপরিচিত মানুষ

মরলেই ডাক্তার মশাইদের কাজ হত লাশের কেটেকুটে সর্বনাশ করা।

ভুতেরাও কম যায় না। লাশের ভুত গুলো হত আরো ভয়ঙ্কর। তারা

ডাক্তার দের আরো বেশি জালাতন করা শুরু করে। দিন যায় দিন

আসে। ডাক্তার মামুদের ও আগ্রহ কমে না-কাটাকুটির জালায়

ভুতেরাও মরে। এইতো সেদিন ই আমাদের চিঙ্কু স্যার বাশঝাড়ে

প্রাকৃতিক কর্ম সাড়তে গিয়ে সেকি তাড়া। অন্যসময় হলে না হয়

ঢিলাঢিলি চলে, তাই বলে সবসময়। তারপরে আবার একদিন লাশ

চুরি করবার সময় যেই না লাশ জ্যান্ত হয়ে ডাক্তারকে ভয় দেখাতে

যাবে তখনি ডাক্তার দিল ছিটায়ে ক্লোরোফর্ম। বেচারী ভুত-সাথে সাথে

অক্কা।আমাদের সসীম কুমার স্যার তো সেদিন মাত্র ভুতের নানীর

পাল্লায় পরে গাছে ঝুলে ছিলেন কিছুক্ষন।
সমাধানের পথ তো দরকার।ভুতেরাও মানে- মানুষ ও মানে।ডাক্তার

রাও বুঝে যে লাশদের বেশি কষ্ট দেয়া উচিত না। কিংবা লাশকে আরো

পরিণত ভাবে সংরক্ষন করা উচিত। যাতে বেশি লাশ থেকে ভুত না বের

হয়।অবশেষে একদিন সামনে এগিয়ে এলেন চুন স্যার। ভুতের হাত

থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য তিনি নিজের গায়ে চুন ভুষি মেখে

রাখতেন। অবশেষে তিনি বললেন-তোমরা লাশের গায়ে যদি

ফরমালিন মেখে রাখ তবে লাশ অনেক দিন থাকবে।
যাই ভাবা সেই কাজ।ভুতেরাও জালাতন কমিয়ে দিল। ডাক্তাররাও

বাচল উতপাত থেকে। তবে মেডিকেল ছাত্র ছাত্রীদের সেই পুরাতন

দিনের স্মরনে কিছু কিছু ভুতের হাতে পড়তে হয়।তাদের মেনে চলতে

হয় কিছু নিয়ম কানুন।
যেমন লাশের অসম্মান করা চলবেনা।কেননা লাশটাও একজন

মানুষের। তিনি নিতান্তই মানুষের সেবার জন্যে নিজেকে বিলিয়ে

দিয়েছেন।
আপনাদের কিছু কিছু ভুতের পাল্লায় মাঝে মাঝে পড়তে হবে। যেমন

আইটেম ভুত, প্রফ ভুত, পেন্ডিং ভুত, সাপ্লি ভুত।
সাথে সাথে থাকবে মাথী স্যারের মত অত্যাচারী ভুত। যারা বিভিন্ন

সময়ে বিভিন্ন স্যারের উপর সওয়ার হয়ে চুলজুল পান্ডে হয়ে যাবে।
অবশেষে শুভকামনা থাকল;।

হড়পুর করে ঘুম থেকে জেগে উঠলাম। উঠেই দেখি হাতের মাঝে

এখনও হাড্ডিটা ঝুলছে। পাশের বেডে শুয়ে থাকা নতুন ইয়ারের

ছেলেকে জিজ্ঞেস করলাম-সেও একই রকম কিছু দেখেছে কিনা।

উত্তরে আসলো না।

No comments:

Post a Comment