১৯৭৪ সালের গল্প।গল্পের নায়ক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র।তিনি ছাত্ররাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন।মিছিল মিটিং হলে সামনের সারিতে থাকতেন।একদিন মিছিল চলা অবস্থায় চোখে আঘাত পান।দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ভতি করা হয়।এ এক্সিডেন্ট এর কারনেহাসপাতালে অনেক দিন থাকতেহয় তাকে।
গল্পের নায়িকাটি ছিল সেই মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বছরের ছাত্রী।তারই বড় ভাইয়ের বন্বু হলেন অসুস্থ্য সেই যুবক।গল্পেরনায়িকা প্রতিদিন দেখতে আসতেন তাকে।একদিন তার চুখের ব্যান্ডেজ খোলা হয়।চুখ খুলে নায়িকাকে দেখলেন দু চোখ ভরে।অনুভবকরলেন,বুকের মাঝে এক ধরনের ভালোবাসার জন্ম নিয়েছে।কিন্তু কিভাবে এই কথা তাকে বলা যায়?সময় চলতে থাকে।পুরোপুরি সুস্থ্য হওয়ার জন্য আরো কিছুদিন হাসপালে থাকতে হয়যুবককে।
হাশপাতালের বেডে শুয়ে স্মাট যুবকটি ভাবতে থাকে মেয়েটা কালো হলেও অনেক সুন্দরী।তার বিশ্বাস মেয়েটি সংসারী হবে,ভালো বধূ কিংবা মমতাময়ী মা হবে।অতএব তাকে আমার ভালোলাগার কথাটা বলাজায় ভালোবাসি।মেয়েটি যুবকটির সেবা যত্ন করতে করতে ছেলেটিকে ভালোলেগে যায় মেয়েটির।কিন্তু এই কথা কীভাবে বলা যায় সে তোঅনেক কালো।মুখ ফুটে কেউ বলতে পারেনা ভালোবাসার কথা।
একদিন যুবকটি সুযোগ পেয়েপ্রেমের প্রস্তাবসহ একটি চিঠি দেন মেয়েটির হাতে।চিঠির লেখা পরে ভালো লেগে যায় মেয়েটির।কিছু না বুঝে সেওবলে..........!শুরু হয় তাদের ভালোবাসার প্রথম অধ্যায়।
আঠারো দিনের পর গল্পের নায়িকা নায়ককে বলেন,আর কত লুকিয়ে প্রেম করব।তোমার পরিবার কি আমাকে মেনে নেবে।মেয়েটি বললো যদি আমাকে সত্যিই ভালোবেসে থাকো তাহলে আমাকে বিয়ে করো।মেয়েটির কথা শুনে ছেলেটি কিছুক্ষন ভেবে বললেন,তুমি অত তারিখে তোমার পরিবারের লোকজন নিয়ে এসো।ঠিক তারিখে মেয়েটি তার এক ভাই এক বোননিয়ে ছেলের বাসায় আসেন।সেখানে গিয়ে দেখেন তাদের বিয়ে করানোর জন্য কজী সাহেব বসে আছেন।সাক্ষী হিসেবে ছেলেটির সঙ্গে তার দুভাই উপস্থিত আছেন।দিনটি ছিলো১৬মাচ ১৯৭৪।তাদের বিয়ে হয়।গোপনে চলছে তাদের সংসার।এক সময় একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে যোগদেন ছেলেটি।ততদিনে দুই পরিবারতাদের বিয়ের খবর জেনে যান।কালো বলে ছেলেটির বাবা-মা মেয়েটিকে বৌ হিসেবে মেনেনিতে পারেননা।কেননা তাদের পরিবারে কোন কালো মানুষনেই।কিন্তু মেয়েটি ভেঙ্গেপড়েনি।মেয়েটি তার গুন দিয়ে কাজদিয়ে পরিবারের সবাইকে খুশি করতে চেষ্টা করেন।মেয়েটির গুনের কাছে একসময় কালো রং ঢেকে যায়।একসময় মেয়েটিকে মেনেনেয় তার পরিবারের সবাই।ঘর আলো করে তাদের ঘরে জন্মনেয় একটি ছেলে সন্তান।আস্তে আস্তে অতিথিহয়ে জন্মনেয় আরেকটি মেয়ে সন্তান।সন্তানদের সত্যিকারের মানুষ গড়ার প্রত্যয়ে এবং পরিবারকে সুন্দরভাবে পরিছালিত করারজন্য স্বামীর কথামতো ডাক্তারি পেশা ছেড়ে দেন মেয়েটি।আর ততোদিনে শিক্ষকতা ছেড়ে দেশের একজনপ্রতিষ্ঠিত ব্যাবসায়ী হয়েযান ছেলেটি।শুরু হয় তাদের ভালোবাসার দ্বিতীয় অধ্যায়।
বাবা-মার চাওয়া মতোই তাদের দুই সন্তান বড় হতে থাকে।সন্তানেরা কখনোই দেখেননি বাবা-মাকে ঝগড়া কিংবা কাউকে কটূ কথা বলতে।সেই আদশ নিজেদের মধ্যে ধারন করে বেড়ে ওঠে দুই সন্তান।চার বছর আগের কথা।২০০৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ব্যাবসায়িক কাজে রাজশাহী থেকে ঢাকা আসার পথে টাঙ্গাইলে মারাত্মক এক সড়ক দুঘটনায় ছেলেটি মারা যান।মারা যাবার ৫ মিনিট আগেও মোবাইলে স্ত্রীর সাথে কথা হয় ছেলেটির।"আমি রাস্তায়।বাসায় আসছি।একসঙ্গে রাতের খাওয়াখাব"।স্বমীর মৃত্যুর শোকে পাথর হয়ে পড়েন স্ত্রী।কিন্তু তিনি ভেঙ্গে পড়েননি।স্বামীকে দেওয়া কথামতো আজ দুই সন্তানকেই যোগ্যতম মানুষহিসেবে তৈরি করেছেন।সন্তানদের সুখের জন্য সব করতে পারেন তিনি।যেমন করেছেন স্বামীরজন্য।স্বামীর হাতে গড়া ব্যাবসার পুরো দায়িত্ব এখন তার কাধে।প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারমেন তিনি।আর দুঈ সন্তান পরিছালক হলেও বড় সন্তান ছেলেই সব দেখাশোনা করেন।আর মেয়েটিপড়াশোনার পাশাপাশি শোবিজের একজন জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী।সেই পরিবারের একজন রোমান্টিকস্বামী কিংবা আদরের বাবাযশূন্যতা থাকলেও ভালোবাসার কোন কমতি নেই।
No comments:
Post a Comment