Responsive Ads Here

20 January 2012

একটি রাতের গহীনে

নামিরা বসে ছিল KLCC রেল স্টেশনে ।
LRT ট্রেন টা কখন আসবে সেটা লেখা আছে স্টেশনে এর সিগন্যাল পয়েন্টে । আর ও সাত মিনিট । ঘড়ির কাঁটা রাত ১০ টা ছুঁই ছুঁই । এই রাতেও পরিপাটিস্টেশনে গিজ গিজ করছে মানুষ। হরেক রকম মানুষ। হরেক বর্ণের। হরেক পোশাকের। এমনিতেই তিন জাতির বাস এখানে - মালে, তামিল আর চাইনিজ । মালে মেয়েরা জিনস গেঞ্জি পরলেও মাথায় হিযাব , তাদের আলাদা করা সোজা, চাইনিজরা দারুন সাদা , তামিলরা অধিকাংশই একটু মোটা বা বেঢপ আর কালো। এই তিন জাতির ভাষাও আলাদা। তার সবাই নিজেদের মধ্যে কথা বলতে মগ্ন।
একটি বাংলাদেশী পরিবার ও দেখা যাচ্ছে। মা টি এক অতীব মায়াকাড়া তরুণী একটা ঘন নীল সালওয়ার কামিজ পরনে, একটা গুল্লুমুল্লু মেয়ে আনুমানিক বছর দুয়েক, কোলে নিয়ে বসে আছে। বাচ্চাটি মোটেই চুপ করে নেই, সে মায়ের মুখ তার দিকে ফিরিয়ে তার নিজস্ব ভাষায় গান করছে। আর তার পাশে একটি ৭/৮ বছরেরে ছেলে। তার হাতে একটি প্লাস্টিক এর সাপ। সে বাবার কানে কানে কি বলছে আর খুব হাসছে। বাবাটিও তরুণ, স্মার্ট একটা ব্লু গেঞ্জি পরে আছে। অনেকক্ষণ ধরে আনমনে ওদের দিকে তাকিয়ে ছিল বলেই হয়ত চোখাচোখি হতেই তরুণী মা টি হাসল। সৌজন্যমূলক হাসি।
অনেক দিন প্রবাসে থাকায় নিজের দেশের মানুষ দেখলে এখন নামিরার বুকে আলাদা কোন হিল্লোল জাগেনা, কথা বলার জন্য সে কোন তৃষ্ণা বোধ করেনা। কোন একাত্মতা বোধ তাকে ছুঁয়ে দেয়না। এত বাংলাদেশি এখানে, সব কিসিমের, সব লেভেলের , ওয়ার্কার থেকে শুরু করে টিচার, ঘাস কাটনে ওয়ালা থেকে শুরু করে বিজনেস মেগ। কি নাই। কিন্তু নামিরা সবার কাছ থেকে নিজেকে একটু গুটিয়ে রাখে। কথা বললেই কথা বাড়বে। কথার খেলা চলতে থাকবে। এই কথার খেলাকে বড় ভয় নামিরার। কোন কথা থেকে কি হয়ে যায়। তার আদি, অন্ত নিয়ে কি প্রশ্নের সম্মুখীন হয়। নামিরা তাই চুপচাপ থাকে। এমনকি তার বন্ধু মহলে ও সে অনেক চাপা । নিজের জীবন নিয়ে কখনো আলোচনা করেনা সে। তার বুকটা সবসময়ই ঘন মেঘে ভরা, বর্ষার জলে টলমল করে তার গহিন মায়ার চোখ দুটো , একটু টোকাতেই হয়তো নামবে ভারী বর্ষণ, নামিরা তাই আগ্রহী কোন দৃষ্টির সামনে উদাস হওয়ার ভাব করে। উদাস হয়ে সামনের ট্রেন লাইনের দিকে তাকিয়ে থাকে। তার কাটা কাটা অসম্ভব আবেদনময়ী চেহারাতে বিষণ্ণতা যোগ হয়ে হয়তো তার চেহারাকে এক আশ্চর্য সুষমা দেয়, আর তাই ঘুরে ফিরে অনেকেই তাকে দেখে। ফিরে ফিরে দেখে। তার চোখে চোখ রাখতে চায়। নামিরা অভ্যস্ত হয়ে গেছে তাতে, তার খারাপ লাগে না । সে জানে মানুষের মধ্যে আছে ঈশ্বর , আছে রুপমুগ্ধতা , আর তাই মানুষ খারাপ হয়ে ও কখনো বেশি খারাপ হতে পারেনা। যে যাই বলুক। এই নামিরার বিশ্বাস । তার জীবন চলার পাথেয়। এইত তার জীবন।
নামিরা টাইম দেখে। টাইম হয়ে এসেছে প্রায়। সবাই দাঁড়িয়ে গেছে। নামিরা ও দাঁড়ায় । সাদা সুন্দর সাপের মত ট্রেনটা এঁকেবেঁকে কাছে আসতেই তাতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে মানুষের দল। লেডিস কূপ আলাদা করা থাকলেও তা ঘর ফেরা মানুষের দেখার অবসর কই? আর তাইতো সবাই সামনে যে বগিটা পায় তাতে ই ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাই কিছু কামরা লোকে লোকারণ্য হয়ে যায় আর কিছু কামরা খালি পরে থাকে।
মালয়েশিয়ার ট্রেনগুলো অবশ্য ভাল। ঝকঝকে, পরিষ্কার, খোলামেলা, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। এই গরমেও একটু একটু কাঁপে নামিরা। তার ভেতরের কষ্টে না এসির বাতাসে বোঝা যায় না । তার গায়ে একটা হরেক রঙের চেক চেক দেয়া পাতলা ফু্ল হাতা টিশার্ট আর আর কালো পা পর্যন্ত জিন্স। মুজা জুতা পরে থাকায় তাও কিছুটা রক্ষা। তার হাল্কা কোঁকড়ানো রেশম কালো চুল গুলো ছড়িয়ে আছে পিঠময়। একটু হেলান দিয়ে বসে নামিরা। একটু ক্লান্ত লাগে, এই ক্লান্তি শরীর ছুঁয়ে নেমে গেছে অনেক গভীরে। একটু চোখ লেগে আসে, ঘুম পায় তার রাতের পর রাত জাগা চোখ দুটিতে। ট্রেনটা একটা টানেলে ঢুকেছে । একটু বেশি খড় খড় শব্দ করে। পাশের সহযাত্রীদের কথায় আবার ঘুমটা একসময় কেটে ও যায়।
দিনটা গিয়েছে পাগলা ঘোড়ার মত। গতিময়, ভাবনাহীন কিন্তু ছন্দহীন। KLCC র একটা সুপার মলে নামিরা কাজ করে। কাউনটারে। সকাল ৮ থেকে রাত ৮ টা। বার ঘণ্টার টানা কাজ। প্রতিটি আইটেম চেক কর, মেমো কর, পেমেন্ট নাও। মালপত্র গুলো প্যাকেট করে দাও। আবার অপেক্ষমাণ সামনের জনকে দেখ, তার আইটেম গুলো ইলেকট্রিক মেশিনে দাও । মাঝখানে হাফ এন আওয়ার এর লাঞ্চ ব্রেক বাদ দিলে টানা এই কাজ , মাঝে মাঝে একটু কথা পাশের সহকর্মী বু আর ফিওনার সাথে। তাও তেমন জমে না। লাঞ্চে ওরা নুডুলস খায় তারিয়ে তারিয়ে, এখানকার নুডুলস এর অনেক variety , মোটা মোটা বা একদম সুতার মত চিকন। তাতে অনেক সস দিয়ে লাল টুকটুক করে খায় এরা। দেখলেই বমি আসে তার। ভয়াবহ লাগে। সে একটা বিস্কিট খায়, বা দুই টুকরা ব্রেড এর মধ্যে একটুকরা চীজ । একটা আপেল। খাওয়া দাওয়াতে তার চিরকালের আপত্তি আর এখন তো সেটা অনেক বেড়েছে। মাঝে মাঝে সে সারাদিন জুস বা সয়া দুধ খেয়ে পার করে দেয়, চাবাতে হয় না, গলায় টেনে নেয়া যায়। আজকে শুধু একটা বার্গার খেয়েছে সে, সারদিনে। এখন তাই অনেক ক্ষুধা বোধ হয়। বুকটা জ্বলে। গলায় ঝাঁজ উঠে আসে। কিছু খেতে ইচ্ছে করে। একটা বিস্কিট। না খাওয়াই হয়ত ঠিক। বড় বড় করে সামনে লেখা আছে no food and no dinks।
KL central এ এসে আবার ট্রেন বদল । আবারো অপেক্ষা । আবারো ট্রেনে ওঠার চক্কর। তার পোস্ট- গ্রেড এর দেড় বছরের প্রায় বছর খানেক শেষ হয়ে গেছে। আর একটা assignment আর dissertation. এক কালের তুখোড় ছাত্রী রেকর্ড মার্কস পাওয়া নামিরা আজকাল বই নিয়ে বসতে ভয় পায়। তার বুকটা খালি হয়ে গেছে, তার মাথাটা বোধহীন হয়ে গেছে, তার চিন্তাশক্তি কমে গেছে, বই নিয়ে বসলে সে এখন অসহায় ফিল করে, লেখা গুলো বা নেট থেকে নামানো আর্টিকেল গুলো দুর্বোধ্য লাগে, সুপারভাইজর কে অনেক দূরের মানুষ মনে হয়। আর মাত্র কিছুদিন বাকি কিন্তু এখনো সে প্রপোজালটা ও রেডি করতে পারেনি। সে তাই ক্যাম্পাসে থেকেও লুকিয়ে রাখে নিজেকে, যদি হটাতই দেখা হয়ে যায় ডক্টর মারগারিটার সাথে আর তাকে বলে হাই প্রিটি গার্ল, হাউ ফার হেভ উ ডান ?
২/৩ সিট পরেই সেই দম্পতি। পাশাপাশি সিটে মা আর ছেলে। আরেকটায় বাবা মেয়ে। গুল্লুমুল্লু মেয়েটা বাবার কানে কানে গান বলছে, আয়রে পাখি লেজ ঝোলা। আহা কি আনন্দময় শৈশব, চিন্তাহীন, ভাবনাহীন, কষ্টহীন। ছেলেটা মায়ের হাত শক্ত করে ধরে আছে। অন্ধকার নিকষ কাল আঁধারে তার চোখ। খুব মনোযোগ দিয়ে কি দেখছে আর মার সাথে পুটপট করে ইংলিশ এ কথা বলছে। দারুন দুইটা বাচ্চা , বুকের মধ্যে গহন তৃষ্ণা জাগাবার মত দুটো মুখ। ঈর্ষা হয় ভীষণ নামিরার ওই তরুণী মাটিকে, তার বুক জ্বলে যায়, কপালে ঘাম জমে, মুখটা তেতো হয়ে । ওরা কেন বেছে বেছে এই বগিতেই উঠলো ?
একটার পর একটা ষ্টেশন পেরিয়ে ট্রেনটা একসময় কাজাং আসে । এবার ফিরবে নামিরা তার ঘরে। ঘর না dormitory তে নামিরার একটা রুম আছে , তাই তার নিজস্ব আশ্রয়। তাতে শূন্যতার বাসা। শূন্যতারা তাঁর সাথে খেলা করে, তাকে জড়িয়ে ধরে, তাকে আলিঙ্গন করে অহর্নিশ। তাকে ছেড়ে যায়না। রুমটাতে নিজের জামাকাপড়, অনেক বই আর একটা ল্যাপটপ। এই তো তার জগত। এইত পৃথিবীতে তার একটু যায়গা। আর কয় মাস পরেই শেষ হয়ে যাবে তাও। তারপর কি হবে নামিরা ভাবতে পারেনা। ভাবতে গেলেই তার ক্লান্ত লাগে, চোখে অবাধ্য জল আসে আর আসে ভয়ংকর সব ভাবনা , তাকে তাড়িয়ে বেড়ায়, তাকে ব্যথিত করে, তার শূন্য বুক আর ও শূন্য করে দেয় । সে দেশে ফিরবে কিনা জানেনা, সেখানে কেউ তার জন্য কোল পেতে নেই, ঘরে বাইরে তার জন্য জমে আছে অনেক অভিশাপ আর ঘৃণা । এত ভার সে সইতে পারবে কিনা জানেনা।
মালয়েশিয়াতে খুব বৃষ্টি নামে। বলা নেই কওয়া নেই, পাহাড়ের উপরে যে আকাশ সেই আকাশের মেঘগুলো জল হয়ে যায় , নিরন্তর কাঁদে কারনে অকারনে, সময়ে অসময়ে। এই যে এতক্ষণের শান্ত আকাশ এখন হটাতই অস্থির। নামিরার হাতে ছাতা নেই, আজকেই ভুলে ফেলে এসেছে তার কাউনটারে ভেবেছিল কালকে নেবে। কিন্তু আজ একি বৃষ্টি। সাথে মেঘের ডাক, বজ্রপাত, আকাশ আজ তার মতই অস্থির । সেই দম্পতি ও অপেক্ষা করছে ট্যাক্সির । মেয়েটা ঘুমিয়ে পড়েছে, বাবার কাঁধে মাথা, তার সুন্দর গোলাপি গাল দুটি টুকটুক করছে। ছেলেটি মগ্ন এখনো হাতের সাপ নিয়ে, কথা বলছে তার সাথে। মা টির মুখ প্রসন্ন, কি এক গভীর তৃপ্তি আর শান্তির খেলা তাতে। বাবাটি ট্যাক্সি পেয়ে গেছে, দরদাম করছে। উঠে যাবে এখনি। ফিরবে ঘরে, ঘর বসত করবে, সোহাগ করবে বউকে, বাচ্চাদের আদর করবে, কখনো রাগ করবে, বলবে বাচ্চাগুলো সব দুষ্ট হয়ে যাচ্ছে, কেন শাসন করনা, পর মুহূর্তেই আবার বাচ্চাদের চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দেবে। অস্থির লাগে নামিরার, অন্ধ ক্রোধে জ্বলে যায় তার শরীর মন, সব জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিতে ইচ্ছে করে। হটাত কি হয়ে যায় তার । এগিয়ে যায় পায়ে পায়ে। ট্যাক্সির পথ আঁটকে দাঁড়ায় । তার সাতাশ বছরের নম্র গলাটি কি এক বিষের আগুনে হিশহিশ করে পোড়ে। দম্পতিকে বলে
বাচ্চারা কি খেলে ? ওরা কি বৃষ্টি ভালবাসে?
তাঁর গলার স্বরে চমকায় তরুণটি । যা বলেছে তা হয়ত শুনেছে কি শোনানি, অগাধ বিস্ময়ে বলে কি বললেন ?
বলেছি বাচ্চারা যদি খেলে তাহলে ব্যথা পেতে পারে, বেশি ব্যথা পেলে মরেও যেতে পারে। বারান্দার গ্রিল আছে তো ? উপর থেকে পড়লে বাচ্চারা কিন্তু বাঁচেনা। মরে গেলে কিন্তু সবই যাবে।
মেয়েটির মুখের লাবণ্য শুকিয়ে গেছে, তাতে তীব্র শঙ্কা । হাত আঁকড়ে ধরেছে শক্ত করে ছেলের।
নামিরা আবার তাঁর নিজের কথাতেই চমকায়। মা টির দিকে তাকিয়ে বলে বিকেলে ঘুমাবেন না। সর্বনাশ হয়ে যাবে।
বাবাটি প্রাথমিক শঙ্কা কাটিয়ে উঠেছে । তীব্র ক্রোধে কাঁপছে তার গলা, কোনমতে বলল আর ইউ ম্যাড ? কি আজেবাজে কথা বলছেন?
নামিরা সামনের অপেক্ষমাণ ট্যাক্সি তে উঠে যায়। তাড়াতাড়ি। বলে গো, সেমিনি, ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস। আই উইল গিভ ইউ থার্টি রিঙ্গিট । সে আর ফিরে তাকায় না। তারা কি ভাবছে জানে না। আজকের রাত অন্তত আজকের রাতে তরুণীটি তাঁর মত বিষণ্ণ হবে, হয়ত অমঙ্গল ভাবনায় শঙ্কিত হবে, জেগে থাকবে সারাটি রাত। তা ভেবে কেমন এক শান্তি লাগে তার।
ভীষণ জোরে বাজ পড়ল কোথাও । সেদিনটাও এমন ছিল। বর্ষা মুখর রাত না অবশ্য, বিকেল । রুপম বাসায় ছিলনা। ঘুমন্ত বাইশ বছরের মায়ের পাশ থেকে উঠে গিয়েছিল দুই বছরের ছোট্ট সামিরা। বারান্দায়। তার ছোট্ট দুটি হাতে বৃষ্টি মেখেছিল। গ্রিল বেয়ে উপরে উঠে বৃষ্টিতে ভিজতে চেয়েছিল । যখন ঘুম ভেঙ্গেছিল নামিরার তখন সব শেষ। তখন রুপম ফিরে এসেছে। গেটের কাছে ভিড় দেখে এগিয়ে গিয়েছে । যখন ছোট্ট সামিরা কে কোলে নিয়ে রুপম এল, তখনো নামিরা ঘুমে। কলিং বেল এর শব্দে ঘুম ভেঙ্গে দেখেছিল দরজার সামনে অজস্র জনতা, রুপম আর কোলে স্তব্ধ সামিরা। সে ঘটনা গুলো মেলাতে পারছিলনা, সে স্থবির হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু তার ঘুমঘুম চোখ দেখে রুপম মন্তব্য করেছিল ‘ডাইনী’ । খান খান করে ভাঙল সেই সাথে তার জীবনের সব রঙ্গিন কাঁচ , টুকরো টুকরো হয়ে ছড়িয়ে গেল তার ঘর । রুপম স্তব্ধ হল, আত্মীয়রা সরব হল, আর নামিরা চিরকালের মত একা হয়ে গেল।
রাতের আলোতে বড় সুন্দর দেখাচ্ছে ক্যাম্পাস, সামনে লেকের পানিতে ঝলমল করছে সার রাত জ্বলতে থাকা আলোগুলো। সবাই তাকে অমানুষ বলে কিন্তু তার এখনো তার আকাশ ভাল লাগে, নক্ষত্রের রাত ভাল লাগে, মানুষের মত ঘর বাঁধতে ইচ্ছা করে, রুপমের আদর পেতে ইচ্ছে করে আর সবচে ইচ্ছে করে সামিরা কে কোলে নিয়ে হাঁটতে, সেই আয় আয় চাঁদ মামা বলে ঘুম পাড়াতে। অমানুষের কি এইসব ইচ্ছে করে কিনা তার জানা নেই। আজকে রাতেও ঘুম হবে না নামিরার। বিনিদ্র রাত কাটবে। সে পালতে চেয়েছিল। চেনা রাস্তা, চেনা মানুষ, আর চেনা কষ্টগুলো থেকে। কিন্তু নামিরা নিজের কাছেই পালাতে পারল কই? রাত বাড়তে থাকে, বৃষ্টি ধোয়া আকাশে তারাগুলো অহর্নিশ জ্বলতে থাকে, শুধু নামিরা স্তব্ধ হয়ে জানালায় দাঁড়িয়ে থাকে।
নামিরা দাঁড়িয়েই থাকে।

--------সাকিবা ফেরদৌসি (মালায়েশিয়া থেকে)

No comments:

Post a Comment