Responsive Ads Here

19 January 2012

একটি ভয়ঙ্কর ভৌতিক গল্প

একটি ভয়ঙ্কর ভৌতিক গল্প
লিখেছেন কীর্তিনাশা
 
ক্যাটেগরি: অণুগল্প ভৌতক ভয়ঙ্কর সববয়সী
(এ গল্পটা আমার নিজের নয়। বহুকাল আগে শুনেছিলাম আমার এক খালাত ভাইর মুখে। প্রচন্ড ভয় পেয়েছিলাম সে দিন। আসলে আবহটা এমন ছিল ভয় না পেয়ে উপায় ছিল না। গ্রামের বাড়ির উঠোনে রাতের বেলা শীতের পিঠা খেতে খেতে শুনেছিলাম গল্পটা। ভয় কেন পেয়েছিলাম তা বলছি গল্পের শেষে।)
------------------------------------
এক লোক রাতের অন্ধকারে একা জঙ্গলের পথ ধরে বাড়ি ফিরছিল। হাতে টিমটিম করে জ্বলা হারিকেন। চলতে চলতে হঠাত্ সে লক্ষ্য করলো - হারিকেনের আলো পড়ে রাস্তার পাশে কি যেন ঝিলিক দিয়ে উঠলো। কৌতুহলী হয়ে লোকটা এগিয়ে গেল সেই দিকে। গিয়ে দেখল এক তরুনী মেয়ের লাশ পড়ে আছে। সে ভয় পেলেও ঠিকই দেখলো মেয়েটির ডান হাতের মধ্যম আঙুলে একটি হীরার আঙটি জ্বল জ্বল করছে। একটু ইতস্তত করে সে হারিকেনটা পাশে নামিয়ে রেখে লাশের আঙুল থেকে আঙটিটা খোলার চেষ্টা করলো। কিন্তু আঙুল ফুলে ওঠায় কিছুতেই ওটা খুললো না। লোকটা তখন তার পকেট থেকে একটি ছুড়ি বের করলো। তারপর সেই ছুড়ি দিয়ে পুচিয়ে পুচিয়ে লাশের আঙুলটা কেটে ফেলল। ঠিক তখনই রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে কাছাকছি কোথাও একটা শেয়াল ডেকে উঠলো। লোকটা প্রচন্ড ভয় পেয়ে ঐ আঙুল সহ আঙটি পকেটে পুরে ছোটা শুরু করলো। এক ছুটে বাড়িতে এসে কাউকে কিছু না বলে সে ঐ রাতেই চুপে চুপে আঙুল থেকে আঙটি ছাড়ালো। তারপর আঙটিটা লুকিয়ে রেখে আঙুলটা পুঁতে ফেলল মাটিতে।
এরপর অনেক দিন কেটে গেছে। লোকটা সেই মেয়েটির কথা প্রায় ভুলে গেছে। এক অমাবস্যা রাতে সে তখন বাড়িতে একা। চারিদিকে শুনশান নিরবতা। হঠাত্ বাইরে দরজার কড়া নড়ে উঠলো - খট্ খট্ খট্ খট্। সে একটু বিরক্তি নিয়ে গিয়ে দরজা খুললো। দেখলো দরজার সামনে শাদা শাড়ি পড়ে এক তরুনী দাঁড়িয়ে আছে। মাথায় ঘোমটা দেয়া থাকলেও তাতে তার রূপ ঢাকা পড়ছে না এতটুকু। লোকটা গদ গদ হয়ে প্রশ্ন করলো - কি ব্যাপার ? কাকে চান? তরুনী কেমন খসখসে গলায় বলল - ভাই আমি অনেক দূর থেকে এসেছি। যাবো আপনাদের পাশের গ্রামে। কিন্তু এত রাতে অন্ধকারে পথ হারিয়ে ফেলেছি। এদিকে প্রচন্ড ক্ষুধা পেয়েছে। আমাকে যদি আজ রাতে একটু আশ্রয় দিতেন, একটু খাবার দিতেন!
লোকটা যেন এমন সুযোগের অপেক্ষাতেই ছিল। বাড়িতে সে একা তায় আবার এমন সুন্দরী মেয়ে। সে বলল - আসুন আসুন, কোন চিন্তা নেই। সব ব্যবস্থা হবে। সে মেয়েটিকে বসতে দিয়ে খাবার নিয়ে এল। মেয়েটি খাবারের থালা টেনে নিয়ে খাবার মাখাতে লাগলো। লোকটা তখন লোভাতুর চোখে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে আছে। হঠাত্ সে চমকে উঠলো। দেখলো মেয়েটি যে হাত দিয়ে খাবার মাখাচ্ছে সে হাতে চারটি আঙুল। মধ্যমা আঙুলটা যেখানে থাকার কথা সেখান থেকে রক্ত ঝরছে। লোকটির আত্মা কেঁপে উঠলো। সে ভয় পাওয়া গলায় জানতে চাইলো - আ.. আপনার হাতের আঙুলের কি হয়েছে!?
------------------------------------------------------
(আমার কাহিনী এখানেই শেষ। কারন আমার খালাতো ভাই এটুকুই বলেছিল। সে লোকটির ঐ প্রশ্ন করা পর্যন্ত বলে হঠাত্ আমার গলা চেপে ধরে বলেছিল - তুই নিয়েছিস! আর আমি পুরোপুরি তখন গল্পে ডুবে ছিলাম বলে ভয়ে - ওরে বাবা! বলে দে ছুট। আর আমার খালাতো ভাই সহ অন্যরা হেসে কুটি কুটি। এরপর আমি নিজে এই কাহিনী বলে এবং ঐ পদ্ধতি অনুসরন করে অনেককে ভয় দেখাতে সক্ষম হয়েছি। তবে গল্পটা বলার ঢং এবং পরিবেশ একটু ভৌতিকতার সাথে মানানসই হতে হবে।)

কীর্তিনাশা
আপনাদের জন্য স্পেশাল ভুতের গল্প।

No comments:

Post a Comment