Responsive Ads Here

19 January 2012

সিডনীতে কিছু ঘটনা

প্রবাসি বন্ধু থাকে সিডনীতে আসেন তার কাছে থেকে কিছু ঘটনা শুনি

সময়: ফেব্রুয়ারি মাস, ১৯৯৫ স্থান: সিডনী

তখন নতুন এসেছি সিডনীতে। কাজ করি সিডনীর সবচাইতে উঁচু অফিস কমপ্লেক্সে। কমপ্লেক্সটি ৬৭ তলা। আমি মূলত নীচের তলায় কাজ করতাম। সে সময় মাঝে মাঝেই কোন না কোন ফ্লোর রিনোভেশন হতো। মানে একটা অফিস চলে যেত, অন্য অফিস আসতো। এদের অফিস স্পেসগুলো আমাদের দেশের মত নয়। অফিসের জন্য ফ্লোর ভাড়া নেয়া মানে শুধুই ফ্লোরটুকু নেয়া, তারপর ওয়াল, সিলিং, দরজা, জানালা, কিচেন - যার যেমন দরকার সে সেভাবে তৈরি করিয়ে নেয়। আমাদের দেশের মত তৈরি করা ঘরে এসে ওঠেনা ওরা। একটা অফিসে হয়তো ৫টা ছোট ঘর ছিল, পরের অফিস এসে বানিয়ে নেবে ২ টা ছোট ঘর আর একটা বড় ঘর। একটা অফিস চলে যাবার পর অনেক জিনিস ফেলে যাবে, কনস্ট্রাকশনটাও ভেঙ্গে ফেলবে। আমরা সেসব অফিসে যেতাম আসলে ব্যবহারযোগ্য জিনিসপত্রের খোঁজে। কম্পিউটার থেকে শুরু করে ভাল ভাল চেয়ার (যেগুলোর বাজার মূল্য ১০০ ডলারের ওপর), মাইক্রোওয়েভ, মনিটর, টিভি, বাসন কোসন, কার্পেট, ফ্রিজ ... হেন জিনিস নেই যা ওসব ফ্লোরে পাওয়া যেত না। তো ... সেদিন তখন রাত ১২টার বেশী বাজে। আমার কাজ শেষ করে বন্ধুর কাজ শেষের অপেক্ষায় আছি, ওর কাজ শেষ হলে সে আমাকে বাসায় নামিয়ে দেবে বলে। বন্ধুটির কাজ শেষ হলে সে বললো - "চল ৫৩ তলায় যাই, দেখি কিছু পাওয়া যায় কিনা" আমি সানন্দে রাজি হলাম। গ্রাউন্ড ফ্লোরে সিকিউরিটির অনুমতি নিয়ে আমরা গেলাম ৫৩ তলায়। কিন্তু সেদিন কপাল ভাল ছিল না। কিছুই পেলামনা খুঁজে নেবার মত। তো ভাবলাম - এসেছি যখন, তখন কিছু দিয়েই যাই, দুই বন্ধু তাই ঢুকে পড়লাম টয়লেটে। ছোট টয়লেট সেরে বের হবার সময়ই শুনলাম টয়লেটের দরজার সামনে দিয়ে কে যেন হেঁটে যাচ্ছেন। সিকিউরিটি হতে পারে, কিন্তু দরজা খুলে দেখলাম কোট প্যান্ট আর ধুসর হ্যাট পরা একটা লোক করিডোরে বাঁক নিয়ে চলে গেল। এত রাতেও অফিসে কেউ কেউ কাজ করেন, কিন্তু ফাকা ফ্লোরে তো কারও থাকার কথা নয়। তাই সিকিউরিটিকে ওয়ারলেস রেডিওতে বললাম যে ৫৩ তলায় লোক দেখেছি। সিকিউরিটি সাথে সাথে আমাদের নীচে নেমে আসতে বললো, আমরা নেমে এলে সে চোখ মুখ অন্ধকার করে (এমনিতে লোকটা খুব হাসিখুশি থাকে) পুরো ঘটনার বর্ণনা লিখে নিলো ও আমাদের চলে যেতে বললো। পরদিন রাতে কাজে এলে চাবি নেবার সময় সিকিউরিটি বললো আমরা যেন এর পর থেকে বেশী রাতে কোন ফাঁকা ফ্লোরে গেলে সাথে একজন সিকিউরিটি নিয়ে যাই। এই ঘটনার অনেকদিন পর আরেকজন সিকিউরিটির মুখে যা শুনলাম, তাতে ভয় পেলাম। ওই ফ্লোরে ঢোকার বা বের হবার দুটি পথ আছে, এক হলো লিফট, আরেকটা ফায়ার ডোর। করিডোরে, লিফটের ভেতর, ফায়ার ডোরে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা আছে। তারা সবগুলো ক্যামেরা চেক করেও কাউকে সে ফ্লোরে যেতে দেখেনি, এবং আমাদের ঠিকই দেখেছে যে আমরা দুজন অবাক চোখে করিডোরের অপর প্রান্তে কিছু দেখছি। অথচ একই ক্যামেরার ছবিতে আমরা যে সময় লোকটাকে হেঁটে যেতে দেখেছি, সেখানে কিছুই নেই



সময়: নভেম্বর মাস, ২০১০ স্থান: সিডনী

আমাদের এক ছোট ভাই সিডনী মুল শহর থেকে একটু দূরে (জায়গাটার নাম ডবল বে) একটা ব্যাঙ্কে রাতের বেলায় কাজ করে। সেখানে সে মাঝে মাঝেই ভুত বাবাজির দেখা পায়। না না রকম শব্দ করে আর মাঝে মাঝে চেয়ার টেবিল ধাক্কাধাক্কি করে ভুতে। এমন হলে সেই ছেলে দৌড়ে বের হয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর আবার এসে কাজ শেষ করে। সে কারণে আমরা ওকে আর একা পাঠাইনা। সাথে কেউ না কেউ থাকে। তো ... একদিন সেই ছেলে দোতলায় কাজ করছে, তার সাথের ছেলেটি কাজ করছে নীচতলায়। দোতলায় থাকা ছেলেটি নীচে নেমে আসার সময় ওর ভ্যাকুয়াম মেশিনটি সিঁড়ির ওপর রেখে কাজ করছিলো। মেশিনের কর্ডটি লাগানো ছিল উপরের তলায়। হটাত সে দেখতে পায় ভ্যাকুয়াম মেশিনটি উপরের দিকে কেউ টেনে নিয়ে যাচ্ছে। ছেলেটি সোজা দৌড়ে বাইরে বেরিয়ে আসে, তার দেখাদেখি সাথের ছেলেটিও দৌড় দেয়। ওরা বাইরে বেরিয়ে এসে ব্যাঙ্কের গার্ডকে সব খুলে বলে। পরে দুজন গার্ডের সাথে ওরা আবার আসে ব্যাঙ্কের ভেতর। উপরে উঠে দেখে ভ্যাকুয়াম মেশিনটি সিঁড়ির সামনে একটি রুমের ভেতর, অথচ ওই রুমের চাবি আমাদের কাছে নেই। একমাত্র ব্যাঙ্কের ম্যানেজারই সেই রুম খুলতে পারেন। তখন ছেলেরা গার্ডের উপস্থিতিতে কাজ শেষ করে চলে আসে। পরদিন সকালে মেশিনটি পাওয়া যায় সেই রুমের দরজার সামনে। অথচ আমাদের ছেলে দুটোই নয়, দু দুজন বাইরের লোক, মানে গার্ডেরা দেখেছে যে মেশিনটা ছিল রুমের ভেতর ...

No comments:

Post a Comment